Wellcome to National Portal

দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঠাকুরগাঁও-এ স্বাগত 

মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এনফোর্সমেন্ট অভিযান

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, "রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসেবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না"। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করা হয়েছে। আইনগতভাবে দেশের দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও উত্তম চর্চার বিকাশের দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের। দেশে দুর্নীতি ও দুর্নীতিমূলক কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যাবলি কমিশন আইনের ১৭ ধারায় বর্ণিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, দুর্নীতির প্রতিরোধমূলক কাজ, এনফোর্সমেন্ট অভিযানসহ বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধই সর্বাপেক্ষা কার্যকর কৌশল। জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড তথা দুর্নীতির তাৎক্ষণিক প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ১৭ (ট) ধারা অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন এনফোর্সমেন্ট ইউনিট কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

জনস্বার্থ বিবেচনায় সাধারণ মানুষের অভিযোগ জানানোর একটি নির্ভরযোগ্য প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে দুদক অভিযোগ কেন্দ্র (১০৬)। অভিযোগ কেন্দ্রের কার্যক্রমকে দৃশ্যমান ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমোদিত জনবল কাঠামোতে ১ জন উপপরিচালক, ২ জন সহকারী পরিচালক, ৪ জন উপসহকারী পরিচালকসহ মোট ২৬ জন জনবলবিশিষ্ট এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত অভিযোগসমূহের ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ, ফাঁদ মামলা পরিচালনা করে আানীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তফসিলভুক্ত অভিযোগের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিল বহির্ভূত অভিযোগ, যেমন-ব্যক্তিগত বিরোধ, যৌতুক দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বোর্ড অনুমোদনের বাইরে অতিরিক্ত ফি আদায়, সামাজিক বিরোধ, পারিবারিক জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ, যৌতুক ও নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নাগরিকগণ অভিযোগ করে থাকেন। কমিশনের সুস্পষ্ট নির্দেশনার আলোকে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিলভূক্ত অপরাধসমূহের অভিযোগসমূহ যেমন লিপিবদ্ধ করা হয়, তেমনি তফসিলবহির্ভূত জনগুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের বিষয়ে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে টেলিফোনে সতর্ককরণপূর্বক অভিযোগের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত অভিযোগ, দুর্নীতি দমন কমিশনের গোয়েন্দা ইউনিট কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অথবা জাতীয় বা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত কোন সংবাদ, দুদকের ই-মেইল, মোবাইল বা দপ্তরে সরাসরি প্রাপ্ত অভিযোগ বা তথ্য, এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত অভিযোগ কমিশনের মহাপরিচালক (প্রশাসন) -এর নেতৃত্বে পরিচালক/উপপরিচালক (গোয়েন্দা ইউনিট), উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট ইউনিট)-এর সমন্বয়ে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। উক্ত কমিটি অভিযোগসমূহকে (১) অভিযান পরিচালনা, (২) ফাঁদ মামলা পরিচালনা, (৩) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ, (৪) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টেলিফোনিক নির্দেশনা প্রদান, (৫) দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেলে প্রদান, (৬) এনফোর্সমেন্টযোগ্য নয়/পরিসমাপ্তি এই ৬ শ্রেণিতে বিভক্ত করে। অভিযান পরিচালনার বিষয়ে মহাপরিচালক (প্রশাসন) তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনের পক্ষে চেয়ারম্যান মহোদয়ের অনুমোদন গ্রহণ করেন। টিম অভিযান পরিচালনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। টিমের দাখিলকৃত প্রতিবেদনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট ইউনিট কমিশনের অনুমোদনসাপেক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর সর্বশেষ সংশোধনী বিধি ১০ (১)(চ) অনুযায়ী তাৎক্ষণিক মামলা দায়েরের, অনুসন্ধানের অনুমোদন গ্রহণের, প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র প্রেরণের অথবা অভিযোগটি পরিসমাপ্তির জন্য প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

তাৎক্ষণিক এসব অভিযানের মাধ্যমে অনেকাংশেই ঘটমান দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিতর্কিত নিয়োগ বন্ধ করা, নিম্নমানের নির্মাণকাজ বন্ধ করা, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, নদী-খাল ও সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পরিবেশ রক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনার সময় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সহায়তা নেওয়া হয়। ফলে অভিযানের মান এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে।